• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
SonaliNews

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত নিউজ পোর্টাল

পর্দা নামল বইমেলার

কমেছে নতুন বই, বেচাকেনাও


নিজস্ব প্রতিবেদক মার্চ ১, ২০২৫, ১০:১৬ এএম
কমেছে নতুন বই, বেচাকেনাও

ঢাকা : অমর একুশে বইমেলায় এবার বেচাবিক্রি কম হয়েছে, নতুন বইও এসেছে কম, যা নিয়ে লেখক-প্রকাশকসহ সবারই ‘চিন্তা করা উচিৎ’ বলে মনে করছে মেলা পরিচালনা কমিটি।

শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকালে সমাপনী অনুষ্ঠানে মেলার প্রতিবেদন তুলে ধরেন মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব সরকার আমিন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, এবার ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মেলায় নতুন বই এসেছে ৩ হাজার ২৯৩টি। গত বছর মেলায় নতুন বই আসে ৩ হাজার ৭৫১টি; ৩ হাজার ৭৩০টি আসে তার আগের বছর। মেলায় অংশ নেওয়া সব প্রকাশনী মিলিয়ে কত টাকার বই বিক্রি হয়েছে, তার পরিসংখ্যান এখনো জানাতে পারেনি মেলা পরিচালনা কমিটি।

তবে বাংলা একাডেমির বই বিক্রি কমেছে অর্ধেকের বেশি। বাংলা একাডেমি গত বছর মেলায় ১ কোটি ৩৬ লাখ টাকার বই বিক্রি করে, তার আগের বছর করে ১ কোটি ৩৩ লাখ টাকার৷ আর এবারের মেলায় (২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত) বাংলা একাডেমি বই বিক্রি করে ৬১ লাখ ৬৫ হাজার ৫৯৩ টাকার। সরকার আমিন বলেন, এবার বই বিক্রি কম হয়েছে, প্রকাশও হয়েছে কম।

ব্যাপারটি নিয়ে লেখক-প্রকাশকসহ সবারই চিন্তা করা উচিত। আমাদের বই বিমুখতার কারণ কী, তা নিয়েও ভাবা উচিত। এবার বইমেলার ‘থিম’ ছিল ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান: নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ’। বইমেলার অবয়বে ছিল তিনটি রংয়ের প্রাধান্য- লাল, কালো ও সাদা।

আয়োজকদের ভাষ্য, লাল সংগ্রামের প্রতীক; কালো শোকের প্রতীক আর সাদা শান্তির প্রতীক।

গত ১ ফেব্রুয়ারি মেলা উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ৭ লেখকের হাতে তুলে দেওয়া হয় বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার।

মেলায় বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৭০৮টি প্রতিষ্ঠানকে ১০৮৪ ইউনিটের স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়।

বাংলা একাডেমিসহ ৩৭টি প্রতিষ্ঠান উভয় প্রান্তে প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ পায়। এক ইউনিটের ৩৮৪টি, দুই ইউনিটের ২১৯টি, তিন ইউনিটের ৬১টি এবং চার ইউনিটের ২৩টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়।

শিশুদের জন্য ৭৪টি প্রতিষ্ঠানকে ১২০টি ইউনিটের স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়। লিটল ম্যাগাজিন চত্বরের অবস্থান রয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের উন্মুক্ত মঞ্চের কাছে। এই চত্বরে ১৩০টি লিটলম্যাগ স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়।

পুরস্কার : সমাপনী অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমি থেকে একাধিক পুরস্কার দেওয়া হয়। ‘সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ সাহিত্য পুরস্কার ২০২৪’ পেয়েছেন অধ্যাপক হান্স হার্ডার ও কথাশিল্পী বর্ণালী সাহা।

হান্স হার্ডার উপস্থিত হতে না পারলেও ভিডিও বক্তব্য দেন। আর মঞ্চ থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেন বর্ণালী সাহা। অন্যদিকে কবি জসীমউদ্দীন সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন কবি আল মুজাহিদী। তিনি অতিথিদের হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমি প্রবর্তিত ‘গুণিজন স্মৃতি পুরস্কার’ও দেওয়া হয়।

এবার মেলায় নান্দনিক অঙ্গসজ্জায় প্যাভিলিয়ন ক্যাটাগরিতে সেরা প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার পেয়েছে প্রকাশনা ও বই বিপণন প্রতিষ্ঠান 'বাতিঘর'।

এছাড়া এক ইউনিটের স্টল হিসেবে 'মাকতাবাতুল ইসলাম' এবং দুই ও চার ইউনিটের স্টল হিসেবে 'গ্রন্থিক প্রকাশন' এই পুরস্কার পেয়েছে।

গত বইমেলায় প্রকাশিত বিষয় ও গুণমানসম্মত সর্বাধিক সংখ্যক গ্রন্থ প্রকাশের জন্য কথাপ্রকাশকে চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার দেওয়া হয়।

‘গুণমান বিচারে’ সর্বাধিক শিশুতোষ গ্রন্থ প্রকাশের জন্য কাকাতুয়াকে দেওয়া হয় রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই স্মৃতি পুরস্কার।

গত মেলায় গুণমান ও শৈল্পিক বিচারে সেরা গ্রন্থের জন্য পাঠক সমাবেশ (আমিনুল ইসলাম ভুইয়ার প্লেটো জীবন ও দর্শন), ঐতিহ্য (বদরুদ্দোজা হারুনের ভাষাশহিদ আবুল বরকত নেপথ্য-কথা) এবং কথাপ্রকাশকে (সিরাজ সালেকীনের গোরস্তানের পদ্য স্মৃতি ও জীবনস্বপ্ন) মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার দেওয়া হয়।

সমাপনী অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্যে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম বলেন, আমরা চেষ্টা করেছি মেলা সফল করতে। কিছু জায়গায় সফল হয়েছি, কিছু জায়গায় হয়ত পারিনি।

মেলায় অনেক সফলতার জায়গা আছে। আবার যে ত্রুটি ছিল, তা আগামি দিনে আমাদের জন্য অভিজ্ঞতা হল।

সংস্কৃত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, আমাদের এখন ভাবা উচিত, নতুন করে কী করা যায় বইমেলা নিয়ে। তাছাড়া আমরা মনে করি বাংলা একাডেমির সংস্কার করা প্রয়োজন।

তরুণ চিন্তার যারা আছেন, তাদের সঙ্গে বাংলা একাডেমির কোনো যোগাযোগ নাই। আমরা এটা বদলাতে চাই। একাডেমি যেন তরুণ চিন্তাকে ধারণ করতে পারে।

অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমির সভাপতি আবুল কাসেম ফজলুল হকও বক্তব্য দেন।

শুক্রবার সমাপনী দিনে মেলার ফটক খোলা হয় সকাল ১১টায়। দুপুর ১টা পর্যন্ত ছিল শিশুপ্রহর। রাত ৯টায় পর্দা নামে বইমেলার।

এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!