ফাইল ছবি
ঢাকা: জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে যখন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির মতো দলগুলো নির্বাচনী প্রস্তুতিতে সরব, তখন চরম অনিশ্চয়তায় রয়েছে আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক মিত্র-জাতীয় পার্টি। তবে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত না এলেও দলটি নীরবে প্রার্থী বাছাই ও মাঠপর্যায়ের প্রস্তুতি শুরু করেছে। তাদের লক্ষ্য, শেষ পর্যন্ত ‘গ্রিন সিগন্যাল’ মিললে জোটবদ্ধভাবে নির্বাচনে অংশ নেওয়া।
জাতীয় পার্টির নেতারা বলছেন, এককভাবে নয়, বরং জোটগতভাবে নির্বাচনে গেলে দলটির আসন ও প্রভাব উভয়ই বাড়বে। মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ‘জোটবদ্ধভাবে নির্বাচনে অংশ নিলে জাতীয় পার্টিরও যেমন আসন বাড়বে, তেমনি যে দলের সঙ্গে জোট হবে, তাদেরও ভোট বাড়বে।’
দলটির মতে, নির্বাচনে অংশ নেওয়া নিয়ে এখনো ধোঁয়াশা থাকলেও তফসিল ঘোষণার পর পরিস্থিতি স্পষ্ট হবে। তখনই সম্ভাব্য জোটের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
অন্যদিকে, জাতীয় পার্টি নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত দল হলেও অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে এখন দুটি ভাগে বিভক্ত। জিএম কাদের নেতৃত্বাধীন অংশের পাশাপাশি আনিসুল ইসলাম মাহমুদের নেতৃত্বে আরেকটি কমিটি গঠন করে কমিশনে নিবন্ধনের দাবি জানিয়েছে অন্য অংশটি। এই অভ্যন্তরীণ সংকট না মিটলে সংলাপ বা ভোটে অংশগ্রহণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে ইসি।
নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘জাতীয় পার্টির মধ্যে অভ্যন্তরীণ কিছু সমস্যা আছে। এটা তারা ফয়সালা করলে কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে।’
দলটি রাজনৈতিকভাবে কোণঠাসা অবস্থায় থাকলেও আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে পূর্ণ উদ্যমে। ৩০০ আসনেই প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ চলছে, যার নেতৃত্বে আছেন চেয়ারম্যান জিএম কাদের। শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ‘আমাদের ছক করা আছে, কোন আসনে কে প্রার্থী হতে পারেন। প্রয়োজনে দ্রুত প্রার্থী ঘোষণা করা হবে।’
জাতীয় পার্টির ভেতরের আরেক অংশও নির্বাচনে অংশ নিতে চায় ‘লাঙল’ প্রতীক নিয়ে। আনিসুল ইসলাম মাহমুদের নেতৃত্বাধীন অংশের নির্বাহী চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘আমরা আইন মেনে কাউন্সিল করে ইসির কাছে সব নথি জমা দিয়েছি। লাঙল প্রতীক আমাদের কাছেই থাকবে।’
তবে বিশ্লেষকেরা বলছেন, দলীয় দ্বন্দ্ব, রাজনৈতিক কোণঠাসা অবস্থা এবং সম্ভাব্য জোট নির্ভরতা-সব মিলিয়ে জাতীয় পার্টির ভবিষ্যৎ এখনো অনিশ্চিত। তবু দলটির ভেতরে এক ধরনের আত্মবিশ্বাস আছে-শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের অঙ্কে তারা থাকতে চায়, একা নয়, বরং জোটবদ্ধভাবে।
এসএইচ







































