• ঢাকা
  • রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

নতুন কর্মসূচির খোঁজে বিএনপি


বিশেষ প্রতিনিধি নভেম্বর ৬, ২০২৩, ১২:৪১ পিএম
নতুন কর্মসূচির খোঁজে বিএনপি

ঢাকা : বাংলাদেশে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী সংসদ নির্বাচন আয়োজনের দাবিতে আন্দোলনরত বিএনপি বলছে তাদের ওপর দিয়ে এখন ‘গ্রেপ্তার ঝড়’ চলছে। যদিও ‘মাঠের রাজনীতিতে খুব একটা সক্রিয় নন’ এমন কিছু নেতার গ্রেপ্তার দলের মধ্যেই অনেককে বিস্মিত করছে।

পাশাপাশি দীর্ঘ সময় ধরে আন্দোলন চালিয়ে যেতে হতে পারে এই বিবেচনায় হরতাল অবরোধ ছাড়াও নতুন কী ধরনের কর্মসূচি দেয়া যায় তা নিয়ে ভাবতে শুরু করেছে দলটি। বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সাথে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

দলটি এখন ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে, যা চলবে মঙ্গলবার ভোর ৬টা পর্যন্ত। এরপর বুধ ও বৃহস্পতিবারের জন্য নতুন কর্মসূচি আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে দলীয় সূত্রগুলো বলছে, হরতাল কিংবা অবরোধ ছাড়াও আর কী কী ধরনের কর্মসূচি দেয়া যায় তা নিয়ে চিন্তা করতে দলের নেতাদের পরামর্শ দেয়া হয়েছে শীর্ষ পর্যায় থেকে।

দলটির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, বিএনপির আন্দোলন দারুণভাবে চলছে এবং আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা চেষ্টা করছি সহিংস না হয়ে আন্দোলন চালিয়ে যেতে। সামনের পরিবেশ পরিস্থিতিই বলে দিবে আমরা কোনে দিকে যাবো।

দলের কেন্দ্রীয় কমিটির আরেকজন নেতা কায়সার কামাল বলেন, যে কর্মসূচিতে জনগণের অংশগ্রহণ থাকবে বলে মনে হবে এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী যে ধরনের কর্মসূচির প্রয়োজন অনুভূত হবে সামনে সে ধরনের কর্মসূচিই আসবে।

নেতাদের ঘনিষ্ঠ কিছু সূত্র জানিয়েছে, হরতাল-অবরোধ চললেও সামনে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর, এমনকি নির্বাচনের পরেও আন্দোলন অব্যাহত রাখার মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে- এমন বিবেচনা থেকেই আরো নতুন কর্মসূচির খোঁজ করছে বিএনপি।

আগে নির্বাচন কমিশন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও সচিবালয় ঘেরাও পালন করে হরতাল-অবরোধে যাওয়ার চিন্তা থাকলেও ২৮ অক্টোবরের সহিংসতার পরদিন হরতাল এবং এরপর একদিন বিরতি দিয়ে তিন দিনের অবরোধ পালন করেছে বিএনপি।

বৃহস্পতিবার ঘোষণা করা হতে পারে পরবর্তী সপ্তাহের প্রথম দুই দিনের কর্মসূচি। এরপর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দিনকে কেন্দ্র করে ধারাবাহিক কর্মসূচি আসার সম্ভাবনা থাকলেও সেগুলো কী ধরনের কর্মসূচি হতে পারে তা নিয়েই এখন বিশ্লেষণ করছেন দলের নেতারা।

আবার এত দিন ধরে আন্দোলন আর দেশজুড়ে এত নেতার গ্রেপ্তারের পর কর্মসূচি ঘোষণার পরবর্তী প্রতিক্রিয়া মোকাবেলার মতো সাংগঠনিক সক্ষমতা দলটির থাকবে কি না তাও চিন্তায় আছে অনেকের।

সেলিমা রহমান অবশ্য বলছেন যে, সরকার গ্রেপ্তার মামলা ও হামলা করে যে অবস্থা তৈরি করেছে তাতে এমন চিন্তা বা আলোচনা ওঠা স্বাভাবিক। কিন্তু তার দাবি এখন আন্দোলন শুধু বিএনপির বিষয় নয়।

তিনি বলেন, দেখুন আমাদের প্রত্যেকটি কর্মসূচি সফল হচ্ছে। কারণ সুযোগ পেলেই মানুষ আসছে। আমরা তো জনগণকেই সম্পৃক্ত করতে চেয়েছিলাম। তাই এটি ঠিক যে কঠিন অবস্থা চলছে, কিন্তু আন্দোলনও চলছে। যখন যা দরকার হবে বা জনগণ চাইবে দল তাই ঘোষণা করবে।

তবে দলের একটি অংশ চাইছে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরপরই সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করুক দল। কিন্তু এ নিয়ে দলের নেতাদের মধ্যে বিরোধ আছে। কারণ অনেকে আবার মনে করেন অসহযোগ আন্দোলনের মতো কর্মসূচি দেয়ার সময় এখনো আসেনি।

দলের আইন বিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল বলেন, দলের কর্মসূচিগুলো ভেতরে-বাইরে সবার সাথে আলোচনা করেই চূড়ান্ত করা হয় এবং লিয়াঁজো কমিটি আবার এসব কর্মসূচি নিয়ে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা অন্য দলগুলোর সাথে আলোচনা করে। এরপর দল একটি কর্মসূচি ঘোষণা করে।

তিনি বলেন, এটি আমাদের সাংগঠনিক প্রক্রিয়া। এখন চলমান আন্দোলনের কর্মসূচি নির্ধারণেও একই পদ্ধতিতে সবার মতামত নিয়ে সিদ্ধান্ত নিবে হাইকমান্ড। তবে সময়ের প্রেক্ষাপটে যে কর্মসূচির দরকার হবে এবং জনগণ যে কর্মসূচিতে অংশ নিবে সেটিই দেয়া হবে।

ওদিকে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী নিয়মিত ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন, ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশ কেন্দ্র করে এবং এরপর রবিবার পর্যন্ত দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ১২২টি মামলা হয়েছে এবং গ্রেপ্তার হয়েছেন ৫ হাজার ২৮৪ জন। তবে পুলিশ জানিয়েছে, ২৮ অক্টোবর থেকে পরবর্তী সাত দিনে ৮৯টি মামলায় ২ হাজার ১৭২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে তারা।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ২৮ অক্টোবরের সহিংসতা, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা ও পুলিশ হত্যার জন্য তাদের (আটক বিএনপি নেতাদের) বিচার হতেই হবে। সূত্র : বিবিসি

এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!