ঢাকা: দুবাইয়ে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের একটিই ম্যাচ ছিল। বাংলাদেশ আবার আলোঝলমলে এই শহরে খেলতে আসতে পারে কেবল ভারতকে নিয়ে ফাইনালে উঠতে পারলে।
গ্রুপে নিজেদের বাকি দুটি ম্যাচই পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডিতে। ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড, ২৭ ফেব্রুয়ারি স্বাগতিক পাকিস্তান।
এরপর যদি বাংলাদেশ শেষ চারে চলেও যায়, ৫ মার্চ লাহোরে হবে সেমিফাইনাল। তাতে জিতলে, ওদিকে ভারতও যদি ফাইনালে ওঠে, তাহলেই কেবল ৯ মার্চের শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচের আগে আবার দুবাইয়ে আসার সুযোগ হবে বাংলাদেশের। নইলে লাহোরে ফাইনাল, অথবা তার আগেই দুবাই বিমানবন্দর ছুঁয়ে উড়ে চলে যেতে হবে দেশে।
গ্রুপ ‘এ’-তে এখন পর্যন্ত হওয়া দুই ম্যাচে দুই জয়ী দলের নাম নিউজিল্যান্ড ও ভারত। বাংলাদেশ এবং গ্রুপের অন্য দলগুলোরও পরের ম্যাচগুলোর ফলাফল বাংলাদেশের দিকে এলে সম্ভাবনার দুয়ার খুলেও যেতে পারে।
ভারতের কাছে ৬ উইকেটে হারের পরও দলের আবহ থেকে সে রকম কিছুর বিশ্বাস হারিয়ে যায়নি। অঙ্কের হিসাবে তো বটেই, তাদের মনও বলছে, টুর্নামেন্টটা এখনো বাংলাদেশের জন্য ‘ওপেন’। তা ছাড়া মাংসপেশিতে টান পড়া তাওহিদ হৃদয় সুস্থ হয়ে গেছেন। চোটের কারণে প্রথম ম্যাচে না খেলা মাহমুদউল্লাহর স্ক্যান রিপোর্টও ভালো। এখন শুধু সেরে ওঠার অপেক্ষা।
নিজের সেরা দিনে নিজেকে উজাড় করে দেওয়ার উদাহরণ হিসেবে আহত শরীর নিয়ে সেঞ্চুরি করা হৃদয়ের নাম আসছে। আবার কাজ শেষ করে না আসার উদাহরণ হিসেবে নীরবে উঠেছে জাকের আলীর নাম। আর ওপরের দিকের ব্যর্থ ব্যাটসম্যানদের সারি তো বেশ লম্বাই।
পাকিস্তানের ভেন্যুগুলোর মধ্যে রাওয়ালপিন্ডি স্টেডিয়ামের উইকেটকে বলা হয় অন্যতম সেরা ব্যাটিং উইকেট।
গত বছর আগস্টে টেস্ট সিরিজ খেলতে গিয়ে বাংলাদেশও দেখে এসেছে সেই বাস্তবতা। টেস্ট দুটি বাংলাদেশ জিতেছেও, কিন্তু ওয়ানডে ক্রিকেটের হিসাব-নিকাশ ভিন্ন। এখানে একবার ভুল করে বসলে দ্বিতীয় ইনিংস নেই যে নতুন করে শুরু করবেন। আগে ব্যাট করলে চোখের সামনে ৩৫০ ভাসাতে হবে। পরে ব্যাট করলে মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে সে রকম বা তার চেয়েও বড় কিছু কিছু তাড়া করার জন্য।
পিন্ডি স্টেডিয়ামে সর্বশেষ ওয়ানডে হয়েছে আজ থেকে প্রায় দুই বছর আগে, ২০২৩ সালে এপ্রিলে। মজার ব্যাপার হলো ওই সিরিজটাও খেলেছে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশের অবশিষ্ট দুই প্রতিপক্ষ পাকিস্তান আর নিউজিল্যান্ড। দুই ম্যাচের প্রথমটিতে নিউজিল্যান্ড ২৮৮ রান করেও পারেনি হার এড়াতে। পরের ম্যাচে তারা করল আরও বেশি-৩৩৬ রান। তবু এই ম্যাচেও জয়ী দলের নাম পাকিস্তান।
বুঝতেই পারছেন পিন্ডি স্টেডিয়াম কী নিয়ে অপেক্ষায় আছে বাংলাদেশের জন্য। তবে গত বছরের টেস্ট সিরিজের সুখকর অভিজ্ঞতার কারণে পিন্ডির উইকেট অন্তত খেলা শুরুর আগে বাংলাদেশের জন্য অস্বস্তিকর কিছু নয়। বাংলাদেশের এখানে বড় রান করার সামর্থ্য প্রমাণিত। এখন শুধু ভিন্ন সংস্করণের ক্রিকেটেও তা করে দেখাতে হবে, যার জন্য সবার আগে প্রয়োজন সামর্থ্যের প্রয়োগ। যেটা দুবাইয়ের উইকেটে করে দেখানো যায়নি।
দেখা গেল ইতিহাস বাংলাদেশের পক্ষে, উইকেটে রানবন্যার আলামত; কিন্তু ব্যাটসম্যানদের ব্যাটে বল লাগছে না! উইকেট বুঝে ওঠার আগেই নড়ে গেল টপ অর্ডার কিংবা থিতু হওয়া ব্যাটসম্যান হঠাৎ ভুল শটে গোল বাধালেন। তবে দিনশেষে টাইগারদের জন্য এখনো দরজা খোলা। সেই বিশ্বাসে আস্থা রেখেই বরং শুরু হোক নতুন শহরের নতুন দিন।
এআর







































