ছবি: সংগৃহীত
আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে একসাথে গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। ভোটাররা একটিমাত্র প্রশ্নে চারটি বিষয়ে ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ ভোট দিয়ে মতামত জানাবেন। প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ঘোষণা করেন, ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠ ‘হ্যাঁ’ সূচক থাকলে সংবিধান সংস্কার ও উচ্চকক্ষ গঠন প্রক্রিয়া শুরু হবে।
তবে প্রশ্নের কাঠামো ও বাস্তবায়ন নিয়ে বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আজাদ মজুমদার নিশ্চিত করেছেন, চারটি ভিন্ন বিষয়ে একটাই উত্তর দিতে হবে। অর্থাৎ কেউ ‘হ্যাঁ’ ভোট দিলে তার মানে চারটি প্রস্তাবে সমর্থন।
ভোটের বিষয়গুলো হলো-
ক. নির্বাচনকালীন সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নির্বাচন কমিশন ও অন্যান্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান জুলাই সনদের প্রক্রিয়ার আলোকে গঠন হবে।
খ. আগামী সংসদ দুই কক্ষবিশিষ্ট হবে। নির্বাচনে দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে ১০০ সদস্য বিশিষ্ট উচ্চকক্ষ গঠিত হবে এবং সংবিধান সংশোধনের জন্য উচ্চকক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের অনুমোদন প্রয়োজন।
গ. সংসদে নারীর প্রতিনিধি বৃদ্ধি, বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার ও সংসদীয় কমিটির সভাপতি নির্বাচন, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সীমিতকরণ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধি, মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও স্থানীয় সরকারসহ ৩০টি প্রস্তাব বাস্তবায়ন আগামী নির্বাচনে বিজয়ী দলগুলোর জন্য বাধ্যতামূলক।
ঘ. অন্যান্য সংস্কার রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুতি অনুসারে কার্যকর হবে।
সাংবাদিক ও কলামিস্ট আমিন আল রশীদ বলেন, চারটি ভিন্ন প্রশ্নের জন্য একটাই ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ ভোটের ব্যবস্থা অনুপযুক্ত। তিনি উল্লেখ করেন, জুলাই সনদে থাকা ৮৪টি প্রস্তাব ও ৭টি অঙ্গীকার সাধারণ মানুষ পুরোপুরি বোঝার যোগ্য নয়। গণভোটে ভোটারদের সিদ্ধান্ত দেওয়া কঠিন হবে।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি সাইফুল হক বলেন, চারটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন একসঙ্গে এক ভোটে বলা সম্ভব নয়। এটি জনগণের ওপর চাপানো একটি জটিল প্রক্রিয়া, যা বাস্তবায়ন করা প্রায় অসম্ভব। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, ভোটে ‘না’ সংখ্যাগরিষ্ঠ হলে সরকার বৃহত্তর রাজনৈতিক জটিলতায় পড়তে পারে।
এ অবস্থায় নির্বাচনের দিন গণভোটে যদি ‘না’ জিতে যায়, তবে সংবিধান সংস্কার প্রক্রিয়া থমকে যাবে। উচ্চকক্ষ গঠন, সংবিধান সংশোধন এবং জুলাই সনদে বর্ণিত অন্যান্য সংস্কার কার্যকর হবে না। রাজনৈতিক দলগুলোর বাধ্যতা ও আগামী সংসদীয় কাঠামো প্রভাবিত হবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এটি দেশীয় রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় এক অপ্রত্যাশিত ও জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে।
এসএইচ







































