• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১০ মে, ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১

‘গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে’ আড়াই কোটি তরুণ ভোটার


বিশেষ প্রতিনিধি জানুয়ারি ২, ২০২৪, ১২:৫২ পিএম
‘গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে’ আড়াই কোটি তরুণ ভোটার

ঢাকা : দেশের প্রায় ১২ কোটি ভোটার নিয়ে যে নির্বাচন হতে যাচ্ছে, তাতে প্রথমবার ভোট দেবেন- এমন নবীনের সংখ্যা প্রায় দেড় কোটি। এর বাইরে আরো এক কোটি ভোটার আছেন, যারা বয়সে তরুণ।

বিএনপিসহ কয়েকটি দলের বর্জনের নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করতে এই নবীনদের আলাদা গুরুত্ব দিচ্ছে ক্ষমতাসীনরা। তফসিল ঘোষণার পরপরই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, আমাদের প্রধান টার্গেট প্রথম ভোটার হওয়া তরুণ শ্রেণি।

দলটির ইশতেহারেও কর্মোপযোগী শিক্ষা ও যুবকদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। নির্বাচন বিশ্লেষকরাও মনে করছেন, ভোটার উপস্থিতির প্রশ্নে নবীন ও তরুণ ভোটাররা বড় প্রভাবই ফেলবেন।

নির্বাচন বিশ্লেষক ও পর্যবেক্ষক ব্রতীর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন মুরশিদ বলেন, নতুন ভোটাররা যদি ভোট দেয়, তাহলে ফ্যাক্টর হবে; আর যদি ভোট না দেয়, তাহলেও এটি একটি ফ্যাক্টর।

গেলবার ভোট কেন্দ্রে যাওয়া নিয়ে ভয়ভীতি ও ইভিএমের গোলযোগে অনেকেই ভোট দিতে পারেননি বলে জানিয়েছেন তখনকার নতুন ভোটাররা। এবার ভোট হচ্ছে ব্যালটে, সে কারণে যান্ত্রিক গোলাযোগের প্রশ্ন নেই।

আবার, বড় দল বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক দেখাতে চাইছেন ক্ষমতাসীনরা। সেই কারণে বেশির ভাগ আসনে নৌকার পাশাপাশি  আওয়ামী লীগেরই স্বতন্ত্র প্রার্থী লড়ছেন, যারা সবাই নিজেদের দিকে ভোট চাইছেন।

শেষ পর্যন্ত ভোটের পরিবেশ সুষ্ঠু থাকলে ভোট দেওয়ার কথা বলছেন নবীন ভোটাররা। তাছাড়া গতবার যারা প্রথমবার ভোটার ছিলেন, সেই তরুণরাও এবার ভোটে উৎসাহ পাওয়ার কথা জানিয়েছেন।

দলীয় ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে কিছু এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনায় উদ্বেগ বেড়েছে। সেই সঙ্গে ভোট বর্জনকারী বিএনপি ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে নিষেধ করছে। এমন পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী ঢাকায় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে ভোটারদের কেন্দ্রে আনার সহযোগিতা চেয়েছে।

নির্বাচন কমিশন বলছে, ভোটের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করা হবে। ভোটারদের কেন্দ্রে আনার দায়িত্ব প্রার্থীদের।

তরুণদের ভাবনায় ‘সুষ্ঠু’ পরিবেশ : ২০১৮ সালের নির্বাচনে প্রথমবার ভোটার ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাসনিম জাহান অর্পিতা। তখন বেশিরভাগের মত তারও ভোটের উৎসাহে ভাটা পড়ে, সে কথাই বলছিলেন চট্টগ্রামের এ ভোটার।

ভোট দেওয়ার জন্য ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে বাড়িতে গেলাম। ভোটের দিন অনেক আগ্রহ নিয়ে ভোটকেন্দ্রে গেলাম। গিয়ে দেখি, মেশিনে ফিঙ্গারপ্রিন্ট ম্যাচ করছে না। সেজন্য না তখন আর ভোট দেওয়া হয়নি। ফিঙ্গার প্রিন্ট জটিলতায় আমার মত অনেকেই ওইবার ভোট দিতে পারেনি।

এবার প্রথমবারের মতো যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার প্রত্যাশা করছেন এ শিক্ষার্থী।

ভোট নিয়ে ঢাকার সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী রেজাউল করিমের শঙ্কা কাটেনি। ২০১৮ সালে ভোট কেন্দ্রে যাওয়া নিয়ে ভয়ভীতি ছিল, তাই তিনি ভোট দিতে পারেননি। গতবার ভোটকেন্দ্রে গোলাগুলি হয়েছিল। এসব দেখে আমার মত অনেকেই ওই বছর ভোটকেন্দ্রে যায়নি। এবার ভোট সুষ্ঠু হলে প্রথমবারের মতো ভোট দেওয়ার অভিজ্ঞতা হবে।

ভোটার হওয়ার পর এবারই প্রথম নির্বাচন এসেছে নরসিংদীর বাসিন্দা শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহর সামনে। ভোট ভাবনার কথা জানতে চাইলে তিনি বললেন, আমি খুবই আনন্দিত যে প্রথমবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট দেব। পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার জন্য আমি কুমিল্লা থেকে বাড়ি যাব । ভোট সবার কাছে একটা অধিকার, এর সঠিক ব্যবহার করতে চাই।

যিনি দেশ ও দশের জন্য কাজ করেন এবং ভবিষ্যতেও করবেন-এমন প্রার্থীকে ভোট দেবেন বলে জানান তিনি। আমি প্রত্যাশা করি, এবারের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন একটি সুষ্ঠ, সুন্দর ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। এবারের গঠিত সরকার বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা এবং একটি উন্নত দেশ গঠনে কাজ করবে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কাজী সামিয়া রহমান এবারই প্রথম ভোট দেবেন। তার প্রত্যাশা, তিনি যেন নিজের ভোট নিজে দিতে পারেন। সামিয়ার কথায়, আমি ভোট দিতে চাই। আমার গণতান্ত্রিক অধিকারের বহিঃপ্রকাশ করতে চাই। আমি যেন গিয়ে এটা না দেখি যে, আমার ভোট কেউ দিয়ে দিয়েছে।

অবকাঠামোর অনেক উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু এমন একটা সরকার আমি চাই, যে সরকার মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো পূরণ করতে পারে। খাদ্য, বাসস্থান, চিকিৎসা- অন্তত এই তিনটি বিষয় যেন গুরুত্ব পায়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুমাইয়া ফারহানা ইসলামও এবার প্রথম ভোটার হয়েছেন। ভোট নিয়ে তার মনে রয়েছে শঙ্কা। আমি এবারই প্রথম ভোটার, তাই ভোট দিতে চাই। কিন্তু আমার ভোট দেওয়া না দেওয়ার ওপর কি কিছু নির্ভর করছে? জানি না আসলে নির্বাচন কতটা অবাধ হবে। এটা নিয়ে এখনও শঙ্কা কাজ করছে।

ভোট দেওয়া নিয়ে সংশয়ের কথা জানালেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাদেকুর রহমান। তার ভাষ্য, দেশের যে রাজনৈতিক অবস্থা, পাশাপাশি বিএনপিসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেকগুলো দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে না। যার জন্য নির্বাচনে ভোট দিব কি না, এটা নিয়ে সংশয়ে আছি।

তাছাড়া ভোট দিতে গিয়ে নিজের ভোট অন্যজন দিয়ে দিয়েছে দেখলেও অবাক হব না। তবে একজন নতুন ভোটার হিসেবে জাতীয় নির্বাচনে নিজের ভোট দেওয়া নিয়ে ছোট সময় থেকেই একটা ফ্যাসিনেশন আছে।

একনজরে দ্বাদশ ভোটের চিত্র

# ৩০০ আসনে ভোটার রয়েছে ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৯১ হাজার ৯৩৭ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৭ লাখ ৭১ হাজার ৭২০ জন এবং নারী ভোটার ৫ কোটি ৮৯ লাখ ১৯ হাজার ৩৬৯ জন। আর হিজড়া ভোটার রয়েছেন ৮৪৮ জন।

# সবশেষ একাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোটার ছিল ১০ কোটি ৪২ লাখের বেশি। সে হিসাবে ২০১৮ সালের পর পাঁচ বছরে ভোটার বেড়েছে প্রায় ১ কোটি ৫৪ লাখের মত।

# ৩০০ আসনে প্রায় ১৯০০ প্রার্থী এবার ভোটের লড়াইয়ে আছেন। বিএনপিবিহীন এ নির্বাচনে সমাঝোতা আর জোটের হিসাব নিকাশের মধ্যে নৌকার প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের শক্ত লড়াই হবে সার্ধশত আসনে। এর মধ্যে শতাধিক স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন, যারা আওয়ামী লীগের নানা পর্যায়ের পদধারী।

# নিজেদের শক্তি আর জনপ্রিয়তা দেখাতে গিয়ে এরইমধ্যে গোটা পঁচিশেক আসনে প্রতিপক্ষের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা, প্রচারে বাধা দেওয়া, মারধর, হামলা, সংঘর্ষ, সহিংসতার তথ্য এসেছে সংবাদমাধ্যমে। পিরোজপুর ও মাদারীপুরে দুজনের মৃত্যুও হয়েছে। আর বরিশালে আওয়ামী লীগের জনসভায় মারামারির মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে।

বিশ্লেষকদের দৃষ্টিতে নতুন ভোটার : নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রশ্নে নবীন ভোটাররা কেমন সাড়া দিতে পারেন, এমন প্রশ্নের উত্তরে ব্রতীর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন মুরশিদ বলেন, নতুন ভোটাররা সবসময়ই সিগনিফিকেন্ট।

কিন্তু এবারের নির্বাচনটা যেহেতু একটি অস্বাভাবিক নির্বাচন, রাজনীতির বাইরে যে তরুণ সমাজ আছে, তারা ভোট দিতে আসবে নাকি আসবে না- সেটি এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। আবার যারা ভোট দিতে যাবে, তারা হয়ত সমর্থক হিসেবে যাবে।

এখন পর্যন্ত ভোটের যে পরিবেশ তা সন্তোষজনক নয় বলে মনে করেন এই নির্বাচন বিশ্লেষক।

শারমিন মুরশিদের ভাষ্য, ভোটের পরিবেশ কোনোভাবেই শুভ না। সেটা আমরা প্রথম থেকেই দেখছি। এখন তো আরও জটিল হয়ে গেল, কারণ তারা নিজেরা নিজেদের মধ্যে ঝগড়াঝাটি শুরু করে দিয়েছে। এটা কোথায় গিয়ে থামবে জানি না।

তবে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, এটা সহিংসতার দিকে যাচ্ছে। স্বতন্ত্র ও সরকার দলের মধ্যেই সংঘর্ষ চলছে। পরিবেশকে কোনোভাবেই ভালো বলা যেতে পারে না।

ভোটার উপস্থিতি নিয়ে গতবারের মত এবার তেমন কোনো বাধা দেখছেন না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক শান্তনু মজুমদার।

তার কথায়, আমার মনে হয় না এবার এমন কোনো ঘটনা ঘটেছে যে, সহিংসতার কারণে ভোট কেন্দ্রে যাবে না ভোটাররা। এটা ঘটবে- যারা শক্ত বিএনপি, তারা হয়তো ভোটদান থেকে বিরত থাকবে।

সাধারণ বিএনপি সমর্থক যারা, যেসব প্রার্থীর দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট চাওয়ার প্রবণতা আছে, সবকিছুর মধ্যে পড়ে এদের (বিএনপি সমর্থক) অনেকেই ভোটকেন্দ্রে যেতে পারে।

অধ্যাপক শান্তনু বলেন, ধর্মীয় ও সংখ্যালঘুরা যদি এমন হুমকি পায় যে, তারা ভোটকেন্দ্রে যাওয়ায় তাদের চিহ্নিত করে রাখছে, অতীতে এগুলো আমরা দেখেছি। সেটা পরিস্থিতির অবনমন ঘটাবে।

কিন্তু সাধারণ অর্থে মনে হয় না সহিংসতার কারণে নির্বাচনে যাবে না- এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

দল মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে তাকে বিদ্রোহী হিসেবে তকমা দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে বহিষ্কারের মত বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়ার নজির আছে। তবে এবার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়  ঠেকাতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায় থেকে বিকল্প (ডামি) প্রার্থী রাখার নির্দেশনা আসার পর দলটির ২৬৫ নেতা প্রায় দেড়শ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।

এ পরিস্থিতিতে নির্বাচন কমিশনের কড়া নজরদারি থাকা প্রয়োজন বলে মনে করেন রাজনীতি বিশ্লেষক শান্তনু। তিনি বলেন, পরিস্থিতি যে কোনো মুহূর্তে এখনকার চেয়ে খারাপ অবস্থা হতে পারে। ছোট ঘটনাকে বড় ঘটনার মত গুরুত্ব দিলেই ভালো।

এখন পর্যন্ত যে সহিংসতার ঘটনাগুলো দেখছি, সেগুলো ক্ষমতাসীন দল ও ক্ষমতাসীল দল অনুমোদিত স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে হচ্ছে। আগে আওয়ামী লীগ থেকে যারা স্বতন্ত্রে যেত, তাদের বিদ্রোহী প্রার্থী বলা হত। এখন বলা হচ্ছে স্বতন্ত্র প্রার্থী।

কারণ দল বলেছে, স্বতন্ত্র প্রার্থীকে কোনোভাবে ডিস্টার্ব করা যাবে না। এবার যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন, তারা ‘হ্যালাফ্যালা’ করা লোক না। তারাও কিন্তু যথেষ্ট প্রভাবশালী নিজ নিজ আসনে।

ভোটার উপস্থিতি প্রশ্নে প্রার্থীদের ইমেজও অনেকক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানের এই অধ্যাপক।

শান্তনু মজুমদার বলেন, নতুন ভোটাররা- ২০০৮ এ আমরা যেমনটা দেখেছি, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ভোট দেওয়ার একটা আগ্রহ তৈরি হয়েছিল। এবার সেই পর্যায়ে আমি দেখছি না।

তবে মেগা প্রজেক্ট যেগুলো হয়েছে- মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে- এগুলো শুধু বয়স্কদের নয়, তরুণদের মধ্যেও ‘পজিটিভ ভাইব’ তৈরি করেছে।

অধ্যাপক শান্তনু বলেন, কর্মসংস্থানের ব্যাপারে তরুণদের মধ্যে অনিশ্চয়তা কাজ করে।

এগুলো সবগুলো মিলিয়ে কাটাকাটি হবে। হয়ত খুব বড় গণজোয়ার তৈরি হবে না কোনো দলের মধ্যে। তবে প্রার্থী টু প্রার্থী ভ্যারি করবে। কোন প্রার্থী তার কতটা কাছে আসতে পারল বা প্রার্থীর ইমেজটা- এবার বিবেচনার বিষয় হবে।

ভোটার নিবন্ধনের প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী বয়সভিত্তিক ভোটারদের মধ্যে ১৮-২৭ বছর বয়সী যারা ২০১৪ সাল থেকে ভোটার হয়েছেন, তাদের সংখ্যা প্রায় আড়াই কোটি হতে পারে।

# ১৮-২১ বয়সী ভোটার রয়েছে ৮৫ লাখের বেশি

# ২২-২৫ বছর ভোটার রয়েছে ১ কোটি ৫ লাখের বেশি

# ২৬- ২৯ বছর বয়সী ভোটার ১ কোটি ৩ লাখের বেশি

# ৩০-৩৩ বছর বছর বয়সী ভোটার ১ কোটি ৫ লাখের বেশি

# ৩৪-৩৭ বছর বয়সী ভোটার ১ কোটি ৪৪ লাখের মতো

# ৩৮-৪১ বছর বয়সী ভোটার হচ্ছে ১ কোটি ২২ লাখের বেশি

# ৪২-৪৫ বছর বয়সী ভোটারের সংখ্যা ১ কোটি ৬ লাখের মতো

# ৪৬-৪৯ বছর বয়সী ভোটার ৬৩ লাখের মতো

# ৫০-৫৩ বছর বয়সী ৮৩ লাখের মতো ভোটার

# ৫৪-৫৭ বছর বয়সী ভোটার ৬৭ লাখের বেশি

# ৫৮-৬০ বছর বয়সী প্রায় ৪০ লাখ ভোটার

# ৬০ বছরের বেশি ভোটারের সংখ্যা পৌনে দুই কোটি

ভোটের পরিবেশ ‘ভালো’, ভোটার আনবে প্রার্থীরা : প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল গত সপ্তাহে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের বলেন, শাসক দলের প্রত্যেকটা নির্বাচনি মাঠ আমরা ঘুরে বেরিয়েছি। প্রার্থীদের সাথে, প্রশাসনের সাথে আমরা সভা করেছি। তাদের কাছ থেকে আমরা খুব বেশি অভিযোগ পাইনি।

প্রশাসনের ওপর তাদের আস্থা রয়েছে। মোটা দাগে খুব বেশি ঘটনা হয়েছে বলে মনে হয় না। সহিংসতা একেবারেই হয়নি সে কথাটা বলছি না।

সিইসি বলেন, একটা সময় প্রচার বন্ধ হয়ে যাবে। তারপর ভোটের দিন আসবে। ভোটের দিন আইনকানুন মেনে যদি ওটাকে (সহিংসতা) নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তাহলেই ভোটাধিকার প্রয়োগ হবে।

তার আগে চট্টগ্রামে প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি বলেছিলেন, কিছু কিছু বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সার্বিকভাবে ভালো আছে।

আমরা আশ্বস্ত করেছি ভোট যেখানেই দেন, সেটা আরেক জায়গায় চলে যাবার সম্ভাবনা নেই, সেটা একশ পার্সেন্ট নিশ্চিত। আগের রাতে ভোট নিয়ে যেসব কথা হয়েছে, সেগুলো ৯৯ নয় ১০০ শতাংশ নিশ্চিত করতে পারি, সেটা কোনো অবস্থাতেই হবে না।

আর নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান মাগুরায় এক অনুষ্ঠানে বলেন, সকলের সহযোগিতায় একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আমরা উপহার দেব। সুষ্ঠু নির্বাচন ও ভোটগ্রহণের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের। কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিত করানোর দায়িত্ব প্রার্থীদের।

নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা গত সপ্তাহে প্রার্থীদের উদ্দেশে বলেন, নির্বাচনে আপনারা আসছেন, কিন্তু ভোটাররা এল না, তাহলে কী হবে- আপনারাই বলেন! সেজন্য ভোটারকে কেন্দ্রে আনা খুবই জরুরি। কেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিতি করা প্রার্থীদের দায়িত্ব। ভোটার কিন্তু কমিশন এনে দেবে না।

আওয়ামী লীগ-বিএনপি কী বলছে : নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনে থাকা বিএনপি আগামী ৭ জানুয়ারির ভোট বর্জনে জনমত গড়তে গণসংযোগে নেমেছে।

সরকার ‘ভাগ বাটোয়ারার নির্বাচন’ করছে মন্তব্য করে জনগণকে ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

ঢাকার ধানমন্ডিতে শুক্রবার সকালে ‘নির্বাচন বর্জনের লিফলেট’ বিতরণ করে তিনি বলেন, আগামী ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হচ্ছে না। এটি একটি ভাগ বাটোয়ারার নির্বাচন, এটি একটি তামাশার নির্বাচন, এটি একটি ইমিটেশনের নির্বাচন।

ভোটারদের প্রতি আমাদের আহ্বান, এই ডামি নির্বাচন বর্জন করুন…ভোটের দিন ঘরে থাকুন, ভোটকেন্দ্রে যাবেন না। ভোটকেন্দ্রে না গিয়ে এই অবৈধ নির্বাচনকে না বলুন।

বিএনপি এলে নির্বাচন ‘প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ’ হত, তবে যেসব দল ভোটে এসেছে, তাদের নিয়েই দেশজুড়ে ভোটের ‘উৎসব’ চলছে বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

বিএনপি মনে করেছিল তারা না থাকলে সারাদেশে লোকজন থাকবে না এবং নির্বাচন উৎসবমুখর হবে না, ভোটার উপস্থিতি শূন্যের কোটায় যাবে। এরকম দুঃস্বপ্ন নিয়ে তারা আন্দোলন করে ব্যর্থ। এখন তারা সরকার কীভাবে ব্যর্থ হবে, ভোটার টার্নওভার কীভাবে কম হবে এবং নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু হবে না বলে নানান গল্প বলে যাচ্ছে।

তবে বিএনপি ছাড়া নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না-এমনটা বিশ্বাস করেন না আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি মনে করেন, জনগণ থাকলেই ভোট অংশগ্রহণমূলক হবে।

বৃহস্পতিবার এক জনসভায় তিনি বলেছেন, নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে জনগণের অংশগ্রহণ হলে, ভোটার উপস্থিতি হলে। ভোটারদের অংশগ্রহণে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে; আর আমরা সেটাই চাই।

এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!