ঢাকা: নেশার ঘোরে গিলে ফেলেছিলেন আস্ত চামচ। নেশা কাটলেও, যেন ঘোর কাটল না তাঁর। চামচ গিলে ফেলার কথা মাঝে মধ্যে মনে হতো। কিন্তু মনে করতেন, স্বপ্নে এমন কিছু দেখেছেন। এবাবে কেটে যায় পাঁচ মাস!
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদনে জানা যায়, ঘটনাটি চীনের ২৯ বছর বয়সী ইয়ান নামের এক যুবকের সঙ্গে ঘটেছে। কয়েক মাস আগে তিনি থাইল্যান্ড গিয়েছিলেন। সেখানেই মদ্যপ অবস্থায় একটি কফি চামচ গিলে ফেলেন ইয়ান। এরপর অনেক সময় বাইরের খাবার খেলে অসুস্থ বোধ করতেন। খাবারের সঙ্গে শরীরে কিছু ঢুকে থাকবে বলে আশঙ্কা করছিলেন তিনি।
অবশেষে সম্প্রতি সাংহাইয়ের একটি হাসপাতালে চিকিৎসকের কাছে যান ইয়ান। পরীক্ষা করে অবাক হন চিকিৎসকসহ উপস্থিত সবাই। ওই যুবকের শরীরের ভেতর ১৫ সেন্টিমিটার লম্বা একটি চামচ! রীতিমতো ক্ষুদ্রান্তে আটকে ছিল চামচটি। একটু এদিক ওদিক হলেই ক্ষুদ্রান্ত ছিদ্র হয়ে যেতে পারত, যা থেকে প্রদাহজনিত সমস্যা এবং রক্তক্ষরণও হতে পারত।
এর পর ঘোর কাটে ইয়ানের। চামচ গিলে ফেলার স্মৃতি যে স্বপ্ন ছিল না, সেটি বুঝতে পারেন তিনি। ইয়ান জানান, গত জানুয়ারিতে যখন থাইল্যান্ড গিয়েছিলেন, সেই সময় নেশার ঘোরে চামচটি গিলে ফেলেন। মদ্যপানে এত বেসামাল হয়ে পড়েন যে, হোটেল কক্ষের ভেতর বমি করার জন্য একটি চামচ গলায় ঢুকিয়েছিলেন। কিন্তু হাত ফস্কে একেবারে পেটের ভেতরে চলে যায় চামচটি। এর পর গভীর ঘুম দেন। পরের দিন সকালে যখন ঘুম ভাঙে, আগের রাতের কথা ভালোভাবে মনে করতে পারছিলেন না ইয়ান। চামচ গিলে ফেলার স্মৃতি মনে হলেও, শরীরে যেহেতু কোনো সমস্যা ছিল না তাই স্বপ্ন ভেবেই উড়িয়ে দেন। এমনকি পেটে যে ব্যথা অনুভব করেন, তা অতিরিক্ত মদ্যপান ও বমির কারণ হিসেবেই ধরে নেন তিনি।
থাইল্যান্ড থেকে চীনের সাংহাইয়ে ফিরে দীর্ঘ পাঁচ মাসের বেশি সময় কেটে গেলেও, তেমন কোনো সমস্যা হয়নি ইয়ানের। কিন্তু চলতি জুন মাসে শরীরে কিছু অস্বস্তি দেখা দেয় তাঁর। অসুস্থ বোধ করলে চিকিৎসকের কাছে যান। সেখানে পরীক্ষা শেষে ক্ষুদ্রান্তে চামচ আটকে থাকার বিষয়টি শনাক্ত হয়।
সাংহাইয়ের একটি হাসপাতালে গত ১৮ জুন অস্ত্রোপচার হয় ইয়ানের। এন্ডোস্কোপিক সার্জারি হয় তাঁর। চিকিৎসকেরা জানান, চামচটি বের করে আনা খুব কঠিন কাজ ছিল। অস্ত্রোপচারে সহজে চামচটি বের করে আনা যাচ্ছিল না প্রথমে। দুটি চিমটা ঢুকিয়ে একটি দিয়ে চামচটিকে পেটে আনা হয়। এরপর সেখান থেকে অন্যটি দিয়ে টেনে বের করা হয়। বর্তমানে ওই চীনা যুবক সুস্থ আছেন।
ইউআর