• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শূন্য আসনে ধানের শীষের সমর্থন পাচ্ছেন যারা


নিজস্ব প্রতিবেদক ডিসেম্বর ২৬, ২০১৮, ০১:৩৮ পিএম
শূন্য আসনে ধানের শীষের সমর্থন পাচ্ছেন যারা

ঢাকা : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ার আবেদনে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতের রায়ে মনোনয়ন বাতিল হয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ১৩ প্রার্থীর। এই ১৩ আসনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন এ জোটের প্রার্থীশূন্য।

এসব আসনের বাতিল হওয়া প্রার্থীদের অধিকাংশই উপজেলা চেয়ারম্যান পদে থেকে পদত্যাগপত্র গৃহীত হওয়ার আগেই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। কারও কারও প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে দণ্ডিত হওয়ার কারণে, কারও ঋণ খেলাপির কারণে। জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা তাদের প্রার্থিতা অবৈধ ঘোষণা করলেও নির্বাচন কমিশন তা বৈধ করেছিল।

পরে নির্বাচন কমিশনের এ সিদ্ধান্ত হাইকোর্ট স্থগিত করেন। এর পর তারা পৃথক আপিল করলে সোমবার শুনানি শেষে চেম্বার বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান ‘নো অর্ডার’ বলে আদেশ দেন।

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ বিএনপির ১৯ জনের প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে।এর মধ্যে ১৩টি আসনে আদালতের চূড়ান্ত রায়ে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীশূন্য থাকছে।

বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সূত্রে জানা গেছে, শূন্য আসনগুলোতে বিকল্প প্রার্থীকে সমর্থন দেবে তারা। নতুবা সমমনা দল কিংবা স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সমর্থন দেয়ার কথা ভাবছে দলটি।

আওয়ামী লীগ কিংবা মহাজোটকে ফাঁকা মাঠে ছেড়ে না দেয়ার বিষয় প্রত্যয়ী জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। এ জন্য আসন ধরে ধরে স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা বিকল্প কাউকে সমর্থন দিয়ে নৌকার প্রার্থীকে পরাজিত করার পরিকল্পনা করছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।

ঢাকা-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন আবু আশফাক। উপজেলা চেয়ারম্যান নিয়ে আইনি জটিলতায় সর্বোচ্চ আদালতে তার প্রার্থিতা স্থগিত হয়ে গেছে। সেখানে বিএনপি, ২০ দল বা ঐক্যফ্রন্টের এখন কোনো প্রার্থী নেই। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন বর্তমান এমপি অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম। বিএনপি জোট তাকেই সমর্থন দিচ্ছে বলে জানা গেছে।

রাজশাহী-৫ আসনে বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী ছিলেন নাদিম মোস্তফা। আইনি জটিলতায় তার প্রার্থিতা বাতিল হয়। সেখানে বিএনপি থেকে অধ্যাপক নজরুল ইসলাম মণ্ডলকে ধানের শীষ প্রতীক দেয়া হয়েছে। তিনিই সেখানে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী।

মানিকগঞ্জ-১ আসনে এসএ কবীর জিন্নাহর পরিবর্তে খোন্দকার আবদুল হামিদ ডাবলু ধানের শীষ প্রতীকে লড়বেন।

সিলেট-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন নিখোঁজ এম ইলিয়াস আলীর সহধর্মিণী তাহসিনা রুশদীর লুনা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি জটিলতায় সর্বোচ্চ আদালতে গিয়েও তার প্রার্থিতা স্থগিত হয়। সেখানে গণফোরামের উদীয়মান সূর্য প্রতীকে মো. মুকাব্বির খানকে সমর্থন দিয়েছে বিএনপি।

মানিকগঞ্জ-৩ আসনে ঋণখেলাপির কারণে আফরোজা খান রীতার মনোনয়ন স্থগিত হয়েছে। সেখানে গণফোরামের উদীয়মান সূর্য প্রতীকে সাবেক এমপি মুক্তিযোদ্ধা মফিজুল ইসলাম খান কামালকে সমর্থন দিতে পারে বিএনপি।

জয়পুরহাট-১ আসনে বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী করা হয় ফজলুর রহমানকে। উপজেলা চেয়ারম্যান পদে থেকে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার আইনি জটিলতায় তার প্রার্থিতা স্থগিত হয়। সেখানে বিএনপির ফয়সাল আলিম নামে আরেক প্রার্থী বৈধ আছেন। এখন ধানের শীষের প্রতীক তাকে দেয়ার জন্য তোড়জোড় চলছে।

নাটোর-১ আসনে আইনি জটিলতায় কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রার্থী মনজুরুল ইসলামের প্রার্থিতা বাতিল হয়। সেখানে বিএনপির শিরিন আক্তার ঐক্যফ্রন্টের প্রতিনিধিত্ব করবেন বলে জানা গেছে। ওই আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট, ২০ দল বা স্বতন্ত্র কোনো প্রার্থীও নেই। তাই ওই আসনে ইসলামী আন্দোলনের ‘হাতপাখা’ প্রতীকের প্রার্থী বাবুল ইসলামকে নিয়ে চিন্তাভাবনা করছে বিএনপি।

ঝিনাইদহ-২ আসনে বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী ছিলেন আবদুল মজিদ। কিন্তু উপজেলা চেয়ারম্যান হওয়ায় শেষ পর্যন্ত তার প্রার্থিতা বাতিল হয়। ওই আসনে বিএনপি, ২০ দল বা ঐক্যফ্রন্টের কোনো প্রার্থী নেই। সেখানে বাসদের আসাদুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলনের মাওলানা ফখরুল ইসলাম ও জাকের পার্টির আবু তালেব সেলিম প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন। এর মধ্যে বাসদের প্রার্থী আসাদুল ইসলামকে বিএনপি জোট সমর্থন দিতে পারে বলে জানা গেছে।

বগুড়া-৩ আসনে ধানের শীষের আবদুল মহিত তালুকদারের জায়গায় স্বতন্ত্র প্রার্থী আফজাল হোসেন (আপেল) এবং আবদুল মজিদের (ডাব) মধ্যে কোনো একজনকে সমর্থন দেয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।

ঢাকা-২০ আসনে ধানের শীষের তমিজউদ্দিনের জায়গায় বিকল্প কোনো প্রার্থী নেই। এ আসনটিতে আ স ম আবদুর রবের নেতৃত্বাধীন জেএসডির এমএ মান্নান নির্বাচন করছেন। তাকেই সমর্থন দেবে ঐক্যফ্রন্ট।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেয়া হয় ইঞ্জি. মোহাম্মদ মোসলেম উদ্দিনকে। কিন্তু তার প্রার্থিতা স্থগিত হয়ে যাওয়ায় ওই আসনে বিএনপির বৈধ প্রার্থী নাছির উদ্দিন হাজারী লড়ছেন। এ নিয়ে তিনি আদালতে রিট করে ধানের শীষ প্রতীক চাইবেন বলে জানিয়েছেন।

নওগাঁ-১ আসনে বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী দেয়া হয় সালেক চৌধুরীকে। আইনি জটিলতায় গতকাল তিনি সর্বোচ্চ আদালতে হেরে যান। সেখানে বিএনপির আরেক প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমানের হাতেই শেষ পর্যন্ত ধানের শীষ প্রতীক থাকছে।

চাঁদপুর-৪ আসনে বিএনপির প্রার্থী ছিল এমএ হান্নান। কিন্তু উচ্চ আদালতে তার প্রার্থিতা স্থগিত হয়ে যায়। সেখানে বিএনপিসহ তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক রিয়াজউদ্দিন নসুও বৈধ প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন। তাকে নিয়ে বিএনপি এখন চিন্তাভাবনা করছে।

বগুড়া-৭ আসনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন মোর্শেদ মিল্টন। সেখানে বিএনপি বা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কোনো প্রার্থী নেই। ওই আসনে বৈধ প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন ন্যাশনাল পিপলস পার্টি-এনপিপির ফজলুল হক ও বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির মোনতেজার রহমান। বিএনপি এই দুজন থেকে একজনকে বেছে নিতে পারে।

দিনাজপুর-৩ আসনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম। সেখানে মোফাজ্জল হোসেন দুলাল নামে বিএনপির আরেকজন বৈধ প্রার্থী রয়েছেন। এ নিয়ে দুলাল রিটও করেছেন। উচ্চ আদালতে আগামীকাল এ নিয়ে শুনানি রয়েছে। এর পরই বিএনপি সিদ্ধান্ত নেবে।

জামালপুর-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন রশিদুজ্জামান মিল্লাত। তার প্রার্থিতা বাতিল হয়ে যাওয়ায় ওই আসনে উদীয়মান সূর্য প্রতীকে গণফোরামের ইঞ্জি. সিরাজুল হককে বিএনপি সমর্থন দেয়ার চিন্তা করছে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!