• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
ভোটের মূলা!

আসছে নৌকা-ধানের শীষের ইশতেহার


আরিফ হোসাইন কনক, জেলা প্রতিনিধি ডিসেম্বর ২, ২০১৬, ০৫:৩৮ পিএম
আসছে নৌকা-ধানের শীষের ইশতেহার

নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দেশের অন্যতম জনপ্রিয় দুই প্রধান দলের প্রার্থীদের ইশতেহার ঘোষণা নিয়ে চলছে নানা পরিকল্পনা। নির্বাচিত হলে ভোটারদের জন্য কী কী সেবা করবেন তা খসড়া আকারে দাঁড় করানোর চেষ্টা করছেন প্রার্থীরা। এ কাজে সহায়তা করছেন দলীয় নেতাকর্মীরা।

ইশতেহারে নগরীর উন্নয়নের ধারাবাহিকতাকে প্রাধান্য দিচ্ছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দলীয় মেয়র প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। অপরদিকে, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারকেই প্রধান লক্ষ্য ভেবে ইশতেহারে অন্তর্ভুক্ত করছেন বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান।

দলীয় সূত্রমতে, বিএনপি প্রার্থীর পক্ষ থেকে ভোটারদের জন্য তৈরি করা নির্বাচনী ইশতেহারে থাকছে একটি খসড়া প্রতিশ্রুতি। যে প্রতিশ্রুতির ওপর ভিত্তি করেই বিএনপি প্রার্থীকে অনেকে ভোট দেবেন।

এ বিষয়ে বিএনপি প্রার্থী সাখাওয়াত বলেন, গণতন্ত্র হত্যাকারী ফ্যাঁসিবাদদের রক্ষা হবে না। তাই নারায়ণগঞ্জের সকল ভোটারকে অনুরোধ করবো ভোটকেন্দ্রে গিয়ে আপনাদের রায়ের মাধ্যমে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনুন। নির্বাচনে আপনাদের রায় দিন। বিরোধীমতের নেতাকর্মীসহ নিরীহ মানুষকে যারা হত্যা, নির্যাতন, মিথ্যা মামলায় জর্জরিত করেছে তাদের বিরুদ্ধে আপনাদের রায় দিন।’

অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান আরো বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জে একটা মেডিকেল কলেজ পর্যন্ত নেই। নেই একটা বিশ্ববিদ্যালয়ও। বর্তমানে যানজট প্রকট আকার ধারণ করেছে। একটা ভালো রাস্তাও নেই। আগের রাস্তাতেই পিচ ঢালাই করা হয়েছে। ড্রেনেজ অবস্থা খারাপ। একটু বৃষ্টি হলেই নগরবাসী ডুবে যায়। আমি চাই নগরবাসীকে এই অবস্থা থেকে মুক্ত করতে। আমাকে সুযোগ দিলে আমি নগরবাসীর জন্য কাজ করবো।

এর মধ্যেই গত ২৮ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জের বন্দর খেয়া ঘাটে গিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাদের দাবি অনুযায়ী প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছেন, ‘আমি নির্বাচিত হলে যত কষ্টই হোক শীতলক্ষ্যা নদীর উপর সেতু করে দেয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করবো। তরুণদের জন্য বেশি বেশি খেলার মাঠের ব্যব্স্থা করবো।

দশ বছর ধরে রাষ্ট্রক্ষমতার বাইরে থাকা দল বিএনপির এই প্রার্থী বলেন, ‘প্রতিশ্রুতির চেয়ে মানুষ গণতন্ত্রের জন্য যে মুখিয়ে আছে তা প্রমাণের জন্য ধানের শীষে ভোট দিয়ে অগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার সরকারের বিরুদ্ধে রায় দিবে। আর এজন্য প্রয়োজন সুষ্ঠু নির্বাচন। সাধারণ জনগণ কোনো বাধা ছাড়াই রায় দিতে পারলে অবধারিতভাবে ধানের শীষেরই বিজয় হবে।

এদিকে, চলমান বিভিন্ন উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখা ও নতুন নতুন উন্নয়নমূলক কাজ শুরু করাকে প্রাধান্য দিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আইভীর পক্ষ থেকে ভোটারদের জন্য তৈরি করা হচ্ছে ইশতেহার।

বিগত সময়ের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড আর ব্যক্তিগত ইমেজকে কাজে লাগিয়ে ক্ষমতাসীন দলের এই প্রার্থী জনমতকে পক্ষে নেয়ার চেষ্টা করবেন। বিএনপির প্রার্থীকে দুর্বল না ভেবে নৌকার পক্ষে ভোটারদের কাছে টানতে গ্রহণযোগ্য ইশতেহার তৈরি করছেন আইভী। নিজের উন্নয়নমূলক চলমান বিভিন্ন কাজকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া আর নতুন নতুন উন্নয়নমূলক কাজ শুরু করাকে এতে অগ্রাধিকার দেয়া হবে।

এ ব্যাপারে আইভী বলেন, ‘গতবার নির্দলীয় নির্বাচন ছিল। এবার দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হচ্ছে। আমি মনে করি এ নির্বাচনটা যেহেতু স্থানীয় সরকারের নির্বাচন তাই প্রতীকের প্রভাব সেভাবে পড়বে না। কেননা, এখানে ব্যক্তির পরিবর্তন হচ্ছে, ক্ষমতার পরিবর্তন হচ্ছে না। সুতরাং আমি মনে করি, এ নির্বাচনে জাতীয় রাজনীতির কোনো প্রভাব পড়বে না।

দেশের ইতিহাসে প্রথম মেয়র হওয়ার সৌভাগ্যবতী এই নারী বলেন, গত ৫ বছর সিটি করপোরেশনে কাজ করেছি। কতটুকু করতে পেরেছি তার মূল্যায়ন নগরবাসী করবেন। আমি প্রতিটি মুহূর্ত চেষ্টা করেছি। গত ৫ বছরে ৬০০ কোটি টাকার কাজ হয়েছে উল্লেখ করে আইভী বলেন, ‘উন্নয়ন কাজের মধ্যে সাড়ে ৩০০ কোটি টাকা সিটি করপোরেশনের নিজস্ব অর্থায়ন। বাকিটা সরকারসহ বিভিন্ন দাতা সংস্থাগুলো থেকে পাওয়া। বিগত দিনে যেসব উন্নয়ন কাজ হয়েছে তার সব হিসাব নগর ভবনে রয়েছে। আমি আশাবাদী মানুষ উন্নয়নের পক্ষেই রায় দেবে।’

ইশতেহারের চেয়ে মানুষ বিগত দিনে কাজকে মূল্যায়ন করেই আগামীতে আইভীকে জয়ী করবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন। তাই বিগত দিনে তার সকল উন্নয়নমূলক কাজকে আবারো একনজরে মানুষের সামনে তুলে ধরতে চাইছেন।

প্রসঙ্গত, আগামী ২২ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন। ২৬ ও ২৭ নভেম্বর মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাই হয়েছে। ৫ ডিসেম্বর থেকে আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণা। নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ থেকে সাবেক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে মেয়রপদে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান। বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচনে ইতোমধ্যে সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি জানানো হয়েছে। তবে সেনাবাহিনী নামানোর মতো পরিস্থিতি নেই বলে দাবি করেছে আওয়ামী লীগ।

সোনালীনিউজ/এমএন

Wordbridge School
Link copied!