• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ট্রাম্পের চেয়ারে বসে বিতর্কে ইভানকা


আন্তর্জাতিক ডেস্ক জুলাই ৯, ২০১৭, ০৬:৪৪ পিএম
ট্রাম্পের চেয়ারে বসে বিতর্কে ইভানকা

ঢাকা: অর্থনৈতিক দিক দিয়ে উন্নত দেশগুলো নিয়ে গঠিত জি-টুয়েন্টি বা গ্রুপ-২০ এর সম্মেলন শেষ হলো রোববার(৯ ‍জুলাই)। সম্মেলনে আলোচিত বিষয়ের বাইরেও অংশ নেয়া বিশ্ব নেতাদের দ্বিপাক্ষিক বিষয়গুলোও বেশি গুরুত্ব পেয়েছে মিডিয়ায়। এর মধ্যে ট্রাম্প ও পুতিনকে ঘিরেও আলোচনা হয়েছে। তবে ব্যাতিক্রম আলোচনার জন্ম দিয়েছে সম্মেলনস্থলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জন্য নির্ধারিত চেয়ারে তার মেয়ে ইভানকার বসা নিয়ে। যা পরবর্তীতে সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো বলছে, জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে কিছু সময়ের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আসনে বসে পড়ে সমালোচনার মুখে পড়েছেন তার মেয়ে ইভানকা। বিবিসির খবরে বলা হয়, শনিবার(৯ জুলাই) জার্মানির হামবুর্গে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন চলাকালে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদোর সঙ্গে বৈঠকের জন্য কিছু সময়ের জন্য আসন ছাড়েন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

ওই সময় পেছন দিকে নিজের আসন ছেড়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মাঝে ট্রাম্পের আসনে বসে পড়তে দেখা যায় ইভানকাকে। ওই একই সারিতে ছিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মের্কেল ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিপেজ তায়িপ এরদোয়ান।

৩৫ বছর বয়সী সাবেক ফ্যাশন মডেল ও ব্যবসায়ী ইভানকা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের একজন অবৈতনিক উপদেষ্টা। তবে যেভাবে তিনি প্রটোকল ভেঙে বিশ্ব নেতাদের জন্য নির্ধারিত আসনে বসেছেন তা নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে। এ ধরনের বৈঠকে কোনো নেতার অনুপস্থিতিতে প্রয়োজনে উচ্চ পর্যায়ের কোনো কর্মকর্তা তার প্রতিনিধিত্ব করবেন- এমনটাই রীতি। 

সম্মেলনের সংবাদ সংগ্রহের দায়িত্বে থাকা একজন অভিজ্ঞ সাংবাদিক বলেছেন, ইভানকা যা করেছেন, তেমন ঘটনা এর আগে কখনও তিনি দেখেননি। যুক্তরাষ্ট্রের ‘ফার্স্ট ডটার’ যখন তার বাবার আসনে বসেছিলেন, সম্মেলনে তখন বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিমের সভাপতিত্বে আফ্রিকার অভিবাসন ও স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে আলোচনা চলছিল। তবে ওই আলোচনায় কোনো কথা বলেননি ইভানকা। কিছু সময় পর আসনে ফেরেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।    

রাশিয়ার একজন প্রতিনিধি ইভানকার ওই আসনে বসার একটি ছবি টুইট করলেও পরে তা সরিয়ে নেন। টুইটারে ইভানকার সমালোচনায় অনেকেই বলেছেন, তিনি নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি নন। তিনি একটি ফ্যাশন হাউজের মালিক, ওই রকম একটি কূটনৈতিক আলোচনায় তিনি বসে পড়তে পারেন না। এদিকে ডেমোক্রেটরা এ ঘটনার সমালোচনা করতে গিয়ে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে স্বজনপ্রিয়তার পুরনো অভিযোগ সামনে এনেছে।

ক্যালিফোর্নিয়া থেকে নির্বাচিত কংগ্রেস সদস্য ম্যাক্সিন ওয়াটারস এমএসএনবিসিকে বলেন, ‘এটা মোটেই ভালো কোনো বার্তা দিচ্ছে না। মুক্ত বিশ্বের নেতা হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জি-২০ সম্মেলনে আমাদের প্রতিনিধিত্ব করলেন, অথচ তিনি কী না নৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে মেয়েকে প্রচারের আলোতে আসার সুযোগ করে দিলেন। তাকে এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে দেখা গেল যার বিষয়ে সে কিছুই জানতো না।’

‘প্রগ্রেসিভ মিডিয়া ফর হিলারি ক্লিনটনস প্রেসিডেন্সিয়াল ক্যাম্পেইন’ এর সাবেক পরিচালক জেরলিনা ম্যাক্সওয়েল বলেন, ট্রাম্পের চেয়ারে ইভাঙ্কার বসাটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। ‘কি যোগ্যতা এবং অভিজ্ঞতা আছে ইভানকা ট্রাম্পের, যার জোরে তিনি টেরিজা মে ও পুতিনের মত নেতার সঙ্গে একই টেবিলে বসেছেন?’ এই ঘটনাকে তিনি ট্রাম্প প্রশাসনের দুর্নীতির নমুনা হিসেবেও আখ্যায়িত করেন।

নারী অধিকারকর্মী এমি সিসকাইন্ডের প্রতিক্রিয়া আরও কড়া; টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘এই ধরনের ঘটনা তখনই ঘটে, যখন একনায়কতন্ত্র চলে।’ অবশ্য ইভানকার ভাই ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র অবশ্য ওই ঘটনায় দোষের কিছু দেখছেন না। টুইটারে তিনি লিখেছেন, ইভানকার ওই চেয়ারে বসা নিয়ে যাদের আপত্তি তারা কি তাকে সেখানে দেখলে খুশি হতেন? সম্মেলনের আয়োজক দেশ জার্মানির নেতা মের্কেল অবশ্য পুরো বিষয়টিকে হালকা করার চেষ্টা করেছেন।  

সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকারপ্রধান কোনো কারণে বৈঠকে অনুপস্থিত থাকলে তার আসনে কে বসবেন তা ওই দেশের প্রতিনিধি দলই ঠিক করে। ইভানকা যুক্তরাষ্ট্রের জি-২০ প্রতিনিধি দলের সদস্য।… সে যে হোয়াইট হাউজে কাজ করে, অনেক কিছুতেই যে সে জড়িত, তা তো সবাই জানে।’

সোনালীনিউজ/ঢাকা/আতা

Wordbridge School
Link copied!