• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ইসলামী দলগুলো একজোট হলে হতে পারে ভিন্ন কিছু


নিজস্ব প্রতিবেদক অক্টোবর ৪, ২০২১, ০৮:৩৮ পিএম
ইসলামী দলগুলো একজোট হলে হতে পারে ভিন্ন কিছু

ঢাকা: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, রাজনীতির মাঠে স্পষ্ট হয়ে উঠছে ইসলাম ধর্মভিত্তিক দল ও সংগঠনগুলোর তৎপরতা। ভোটের মাঠে প্রভাবশালী ইসলামী দলগুলোকে কাছে পেতে তৎপর আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকেন্দ্রিক নির্বাচনী জোট।

আরও পড়ুন: জোটগত রাজনীতিতে নতুনত্ব নিয়ে আসছে বিএনপি 

আওয়ামী লীগ মনে করছে, ইসলামপন্থিদের বেশি করে কাছে টানা গেলে বিএনপির ভোট কমবে। আর বিএনপি মনে করছে, ৯০ শতাংশ মুসলিমের এদেশে ইসলামপন্থি দলগুলোর একটি বিশেষ ভোট ব্যাংক রয়েছে। এ ছাড়া আন্দোলনের মাঠে এরাই তুলনামূলক শক্ত অবস্থানে থাকে। তাই আন্দোলন ও ভোটের মাঠ দখলে রাখতে ইসলামপন্থি দলগুলোকে জোটে রাখতে চায় বিএনপি।

আরও পড়ুন: সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা তারেক রহমানের হাতে
 
এদিকে অতীতের অভিজ্ঞতা ও বঞ্চনা থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামী নির্বাচনের জন্য নতুন করে হিসাবনিকাশ শুরু করেছে ইসলামী রাজনৈতিক দলগুলো। তাই দ্বাদশ নির্বাচনের আগে প্রভাশালী ইসলামী দলগুলো নিয়ে তৈরি হতে পারে পৃথক রাজনৈতিক জোট। আর বাংলাদেশের রাজনীতিতে তৃতীয় শক্তি হিসেবে ইসলামী দলকে প্রতিষ্ঠিত করতে আলাপ-আলোচনা শুরু করেছে বড় দলগুলো।এঅবস্থায় ইসলামী দলগুলো একজোট হলে হতে পারে ভিন্ন কিছু।

আরও পড়ুন: একটি কৌশলে মিল দু’দলে
 
নির্বাচন কমিশনে এখন পর্যন্ত নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৩৯টি। এর মধ্যে ইসলামপন্থি দল মাত্র ১০টি। এর মধ্যে ছয়টিই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আছে। বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটে আছে দুটি দল, খেলাফত মজলিস (ইসহাক) ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ (আবদুল মোমেন)। নিবন্ধিত বাকি দুটি ইসলামী দল ইসলামী আন্দোলন ও খেলাফত আন্দোলন (আতাউল্লাহ) কোনো দিকে যায়নি এখনো।

আরও পড়ুন: অভ্যন্তরীণ কোন্দল মেটাতে কাজ শুরু করেছে আ.লীগ

এদিকে বড় তিন ইসলামী দল রয়েছে তিন অবস্থায়। নিবন্ধিত দলের বাইরে ধর্মভিত্তিক দলগুলোর মধ্যে বড় দল জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন ও ইসলামী ঐক্যজোট (একাংশ) বিএনপির সঙ্গে ২০-দলীয় জোটে আছে। ধর্মভিত্তিক দলগুলোর মধ্যে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন (চরমোনাই পীর) ও ইসলামী ঐক্যজোট (আমিনী) ভোটের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ। একাদশ সংসদ নির্বাচনে ইসলামী ঐক্যজোটের এই অংশ বিএনপির সঙ্গে ছিল না। অন্যদিকে অনেক আগেই জামায়াত নিবন্ধন ও প্রতীক হারিয়েছে।

আরও পড়ুন : জামায়াতের মাস্টারপ্ল্যান ফাঁস
 
২০০৮ সালের ৪ নভেম্বর নিবন্ধন পেয়েছিল বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী। উচ্চ আদালতের আদেশে ২০১৩ সালে দলটির নিবন্ধন স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন। পরে ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর দলটির নিবন্ধন স্থায়ীভাবে বাতিল করে ইসি। জামায়াতের দলীয় প্রতীক ছিল দাঁড়িপাল্লা। হাইকোর্টের মনোগ্রাম দাঁড়িপাল্লাকে কোনো রাজনৈতিক দল তাদের দলীয় প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে না বলে উচ্চ আদালত আদেশ দেয়। এই আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে কোনো দল দাঁড়িপাল্লাকে তাদের দলীয় প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে না বলে নির্বাচন কমিশন প্রজ্ঞাপন জারি করে। একই সঙ্গে জামায়াতের প্রতীকটিও বাতিল করে ইসি। এখনো ইসলামী আন্দোলন স্বতন্ত্র অবস্থানে আছে।

আরও পড়ুন: এবার আর হায়ারে খেলবে না বিএনপি

বিশ্লেষকরা বলছেন, বর্তমানে বড় দুই দলের বাইরে তৃতীয় শক্তি সৃষ্টির প্রবল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে ইসলামী ধারার দলগুলোর মধ্যে। তাই আগামী নির্বাচনের আগে ইসলামী দলগুলোর জোট হওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।  

আরও পড়ুন: রাজনীতিতে সংস্কারের হাওয়া

রাজনৈতিক বিশ্লেষক রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী মনে করেন, ধর্মের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ছে। কিন্তু ধর্মভিত্তিক রাজনীতিতে মানুষ এখনো অভ্যস্ত হয়নি। তবে দেশে যখন কোনো পলিটিক্স না থাকে, যখন শূন্যতা দেখা দেয়, মসজিদকে ঘিরে রাজনীতি করে। ধর্মীয় নেতাদের ঘিরে পলিটিক্স শুরু হয়। এমনটি এখন বাংলাদেশে হচ্ছে। তাই ইসলামী রাজনৈতিক দলগুলো বাংলাদেশে কাছাকাছি সময়ের মধ্যে শক্তি হিসেবে দাঁড়াতে পারে।

আরও পড়ুন: ‘গৃহপালিত বিরোধী দলের’ তকমা ঘোচাতে চায় নেতাকর্মীরা

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেনের মতে, বার্তমান দেশে যে রাজনীতি, রাজনৈতিক দলে যে কোন্দল, গণতন্ত্রহীন, দুর্নীতির মহোৎসব, ছাত্র সংগঠনের মধ্যে মারামারি এসব নৈরাজ্য দেখে সাধারণ মানুষ প্রচলিত দ্বারার এ রাজনীতিতে বিমুখ হচ্ছেন। এ অবস্থায় ইসলামী ধারার এ দলগুলো নতুন জোট গঠন করলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

সোনালীনিউজ/আইএ

Wordbridge School
Link copied!