• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সত্যিই কি ইরান যুক্তরাষ্ট্রে আঘাত হানতে পারবে


আন্তর্জাতিক ডেস্ক জানুয়ারি ১৬, ২০২০, ১১:০০ এএম
সত্যিই কি ইরান যুক্তরাষ্ট্রে আঘাত হানতে পারবে

ঢাকা : ইরাকে দুটি মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ইরানের মিসাইল হামলার জবাবে যুক্তরাষ্ট্র যদি ইরানের ভূখণ্ডের ওপর হামলা চালায় তাহলে ইরানও মূল মার্কিন ভূখণ্ডে হামলা চালাবে। এমনটাই হুমকি দিয়েছে তেহরান। আমেরিকান গণমাধ্যমের এক প্রতিবেদনে এই দাবি করেছে। 
 
মার্কিন সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের আধা সরকারি বার্তা সংস্থা দেশটির ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। যেখানে তাকে বিশাল জনসমাগমের সামনে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘যুক্তরাষ্ট্র সম্ভবত আমাদের আঘাত করবে। কিন্তু আমরা তাদের আরো বেশি আঘাত করবো।’

আয়াতুল্লাহ খামেনি বলেন, ‘আমি এক সময় (ওবামার শাসনামলে) বলেছিলাম, হিট এন্ড রান (হামলা করে লুকিয়ে পড়া) এর সময় শেষ। তোমরা যদি আঘাত করো আমরাও পাল্টা আঘাত করবো।’

তবে ভিডিওটি কবে ধারণ করা হয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

গত শুক্রবার ইরানের শীর্ষস্থানীয় সেনা কর্মকর্তা জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে হত্যা করে যুক্তরাষ্ট্র। তার বদলা নিতে ইরাকে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের দুটি সামরিক ঘাঁটি- ইরবিল ও আল-আসাদ বিমান ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে ইরান। বুধবার ওই দুটি ঘাঁটিতে প্রায় ২২টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ইরানি বাহিনী।

ইরানের এই মিসাইল হামলায় অন্তত ৮০ জন মার্কিন সেনা নিহত এবং আরও ২০০ জন আহত হয়েছেন বলে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে দাবি করা হয়েছে।

ইরানের এই হামলার জেরে যদি পাল্টা কোনো হামলা করে যুক্তরাষ্ট্র তাহলে সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী দুবাই এবং ইসরায়েলের হাইফাতেও হামলা চালানো হবে বলে হুমকি দিয়েছে ইরান।

ইরানের এমন হুমকির পর এখন গোটা বিশ্বের আগ্রহের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে দেশটির সামরিক সক্ষমতা। বিশেষ করে দেশটির ক্ষেপণাস্ত্রের রেঞ্জ বা পরিসীমা নিয়ে রীতিমতো হিসাব কষতে হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশগুলোকে।

প্রশ্ন উঠেছে ইরান কি সত্যিই যুক্তরাষ্ট্রে আঘাত হানতে সক্ষম?

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থার যে ধারণা, তা অনুসারে এ ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলসহ মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের ঘাঁটিগুলোতে আঘাত করতে সক্ষম।

যেমন- শাহাব-১ ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত করতে পারবে ৩০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে। শাহাব-২ এর আঘাত করার পরিসীমা ৫০০ কিলোমিটার। ক্বিয়াম-১ ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত করতে পারবে ৭৫০ কিলোমিটার দূরে উড়ে গিয়ে। ফতেহ-১১০ এর পরিসীমা ৩০০ থেকে ৫০০ কিলোমিটার। জুলফাগার আঘাত করতে পারবে ৭০০ কিলোমিটারের মধ্যে। সবচেয়ে বেশি পরিসীমার ক্ষেপণাস্ত্র শাহাব-৩ আঘাত করতে পারবে ২০০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতেও।

ইরান থেকে তাদের সবচেয়ে বড় প্রতিপক্ষ ইসরায়েলের দূরত্ব ১৭০০ কিলোমিটারের মতো। সে হিসাবে বলাই যায়, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সবচেয়ে বড় মিত্র ইসরায়েলের গোটা এলাকা শাহাব-৩ এর আওতায়ই রয়েছে।

এছাড়া এ ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানতে সক্ষম আফগানিস্তান, কাতার, বাহরাইন, কুয়েত, ইরাক, মিসর, তুরস্ক এবং ইউরোপের রোমানিয়া, বুলগেরিয়া ও গ্রিসের মতো দেশে। এ দেশগুলোর মধ্যে মিসর ছাড়া সব দেশেই যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটি বা উপস্থিতি রয়েছে।

এ ক্ষেপণাস্ত্রগুলো নির্মাণ ও পরিচালনার ভার কেবল ইরানের বিপ্লবী গার্ডের হাতে। এই অভিজাত বাহিনী জবাবদিহি করে কেবল রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির কাছে।

মার্কিন গোয়েন্দারা ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রের পরিসর ২০০০ কিলোমিটার বললেও গেল বুধবারই তেহরান হুমকি দিয়ে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র যদি ইরাকের মার্কিন ঘাঁটিতে হামলার জবাব দেয় তবে সরাসরি মার্কিন ভূখণ্ডে হামলা চালানো হবে। এখন প্রশ্ন উঠেছে কোন শক্তির বলে ইরান এমন হুমকি দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রকে? তবে কি ইরান তাদের অত্যাধুনিক ড্রোনের ওপরই শেষ আস্থা রাখছে।

সোনালীনিউজ/এএস

Wordbridge School
Link copied!