• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

দিন শেষে কারা এগিয়ে বাংলাদেশ না জিম্বাবুয়ে?


ক্রীড়া প্রতিবেদক নভেম্বর ৩, ২০১৮, ০৭:০২ পিএম
দিন শেষে কারা এগিয়ে বাংলাদেশ না জিম্বাবুয়ে?

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: দিন শেষে বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের মধ্যেকার দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টে কে এগিয়ে? এমন প্রশ্নের উত্তরে বলা যায় সমান সমান। বল হাতে স্বাগতিক বোলাররা যেমন সাফল্য পেয়েছে। আবার ব্যাটেও তার জবাব দিয়েছেন হ্যামিল্টন মাসাকাদজা এবং শন উইলিয়ামস। তাদের বিশ্বস্ত ব্যাটে ভর করে ৫ উইকেটে ২৩৬ রান নিয়ে প্রথম দিনের সমাপ্তি টেনেছে সফরকারিরা।

শনিবার (৩ নভেম্বর) সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে জিম্বাবুয়েকে ভালো শুরুই এনে দিয়েছিলেন দু’ওপেনার হ্যামিল্টন মাসাকাদজা ও ব্রায়ান চারি। ১০ ওভার অবধি নির্বিঘ্নে পার করে দিয়েছে ওপেনিং জুটি। তবে তৃতীয় ওভারের পঞ্চম বলে মাসাকাদজার বিপক্ষে লেগ বিফোরের আবেদন জানান বাংলাদেশের পেসার আবু জায়েদ ও ফিল্ডাররা। তাতে সাড়া দেননি নন-স্ট্রাইকে থাকা আম্পায়ার। ফলে রিভিউ নেন বাংলাদেশ দলপতি মাহমুুদউল্লাহ রিয়াদ। রিভিউতে বেঁচে যান মাসাকাদজা।

এরপর জিম্বাবুয়ের রানের চাকা ঘুড়িয়েছেন মাসাকাদজা। তাকে ভালোভাবেই সঙ্গ দেন চারি। ১১তম ওভারের চতুর্থ বলেই বাংলাদেশকে প্রথম সাফল্য এনে দেন বাঁ-হাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম। দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে তিনি চারির উইকেট উপড়ে ফেলেন। সমাপ্তি ঘটে ৩১ বলে ২টি চারে ১৩ রান করা চারির।

দলীয় ৩৫ রানে চারিকে হারানোর পর ক্রিজে ব্রেন্ডন টেইলরকে সঙ্গী হিসেবে পান মাসাকাদজা। দুুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানের কাছ থেকে বড় জুটির প্রত্যাশায় ছিলো জিম্বাবুয়ে। কিন্তু তাদের প্রচেষ্টা সফল হতে দেননি তাইজুল ইসলাম। ১৭ তম ওভারের দ্বিতীয় বলে শট লেগে দাঁড়িয়ে ব্রেন্ডন টেলরের (৬) ক্যাচ অসাধারণ দক্ষতায় লুফে নেন নাজমুল হোসেন শান্ত।

তবে ৪৭ রানে ২ উইকেট হারানো জিম্বাবুয়েকে মধ্যাহ্নভোজের আগে আর কোনও বিপর্যয়ে পড়তে দেননি মাসাকাদজা ও শন উইলিয়ামস। মধ্যাহ্নভোজনের বিরতিতে যাওয়ার আগেই মাসাকাদজা তুলে নেন ক্যারিয়ারে ৩৫ তম হাফ সেঞ্চুরি। মধ্যাহ্ন বিরতি থেকে ফিরেই ধাক্কা খায় জিম্বাবুয়ে। ৩২তম ও দ্বিতীয় সেশনের প্রথম ওভারের শেষ বলে মাসাকাদজাকে লেগ বিফোর ফাঁদে ফেলেন আবু জায়েদ। এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে মাসাকাদজাকে ফেরান তিনি। ফেরার আগে ১০৫ বলে ৪ চার ও ২ ছক্কায় ৫২ রান করেন মাসাকাদজা।

মাসাকাদজার বিদায়ে জুটি বাঁধের সিন উইলিয়ামস ও সিকান্দার রাজা। বড় জুটি গড়ার আভাসই দিচ্ছিলেন তারা। তবে ব্যাট হাতে বেশ সর্তকই ছিলেন এ জুটি। তাই এই জুটি ভাঙ্গতে চিন্তিত হয়ে পড়েন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। তবে টাইগার দলপতির দুঃশ্চিন্তা দূর করেন আরিফুল হকের সাথে অভিষেক টেস্ট খেলতে নামা বাঁ-হাতি স্পিনার নাজমুল ইসলাম। ১৯ রানে থাকা রাজাকে বোল্ড করেন নাজমুল। ২টি চারে ৫২ বলে ১৯ রান করেন রাজা।

দলীয় ১২৯ রানে রাজাকে হারানোর পর ব্যাকফুটে চলে যায় জিম্বাবুয়ে। তবে এতে ভড়কে যাননি উইলিয়ামস। পিটার মুরকে নিয়ে ইনিংস মেরামতের কাজ শুরু করেন। চা-বিরতির আগে আর কোন উইকেট হারায়নি জিম্বাবুয়ে। তাই ৪ উইকেটে ১৪৯ রান নিয়ে চা-বিরতিতে যায় জিম্বাবুয়ে। দ্বিতীয় সেশনে ২ উইকেট হারিয়ে ৬৪ রান যোগ করতে পারে জিম্বাবুয়ে। চা-বিরতির আগে টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান উইলিয়ামস।

চার-বিরতির পরও বাংলাদেশ বোলারদের উপর আধিপত্য বিস্তার করে খেলেছেন উইলিয়ামস ও মুর। এতে দলীয় স্কোর ২শ পেরিয়ে যায় বাংলাদেশের। সেই সাথে টেস্ট ক্যারিয়ারের শতক দেখার অপেক্ষায় ছিলেন উইলিয়ামস। কিন্তু উইলিয়ামসের স্বপ্নে পানি ঢেলে দেন বাংলাদেশ দলপতি মাহমুুদউল্লাহ। ষষ্ঠ বোলার হিসেবে আক্রমনে এসে নিজের দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট তুলে নেন মাহমুদউল্লাহ। স্লিপে বাঁ-দিকে ঝাপিয়ে পড়ে দুর্দান্ত এক ক্যাচ নিয়ে দলনেতাকে উইকেট শিকারের স্বাদ দেন মেহেদি হাসান মিরাজ। ফলে ৮৮ রানে থেমে যায় উইলিয়ামসের ইনিংসটি। তার ১৭৩ বলের ইনিংসে ৯টি চার ছিলো। পঞ্চম উইকেটে মুরের সাথে ৭২ রান যোগ করেন উইলিয়ামস।

দলীয় ২০১ রানে পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে উইলিয়ামসকে হারিয়ে দিনের শেষভাগ নিয়ে চিন্তা পড়ে জিম্বাবুয়ে। ভালোভাবে দিন শেষ করার ইচ্ছায় ছিলো সফরকারীরা। শেষ পর্যন্ত দিনের শেষভাগটা ভালোভাবেই শেষ করেন মুর ও রেজিস চাকাভা। ষষ্ঠ উইকেটে অবিচ্ছিন্ন ৩৫ রান যোগ করেন তারা। এসময় স্কোরবোর্ডে ৫ উইকেটে ২৩৬ রান ছিলো জিম্বাবুয়ের। মুর ৩৭ ও চাকাভা ২০ রানে অপরাজিত থাকেন।

বাংলাদেশের তাইজুল ২টি, আবু জায়েদ-নাজমুল-মাহমুদউল্লাহ ১টি করে উইকেট নেন।

এই ম্যাচ দিয়ে বাংলাদেশের দু’জনের টেস্ট অভিষেক হয়েছে। এঁরা হলেন রংপুরের অলরাউন্ডর আরিফুল হক ও রাজশাহীর অফ স্পিনার নাজমুল ইসলাম। শুধু তাই নয়, দেশের অষ্টম টেস্ট ভেন্যু হিসেবে অভিষেক ঘটল সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের। অভিষেক টেস্টকে স্মরণীয় করে রাখতে টস হয়েছে বিশেষ কয়েনে। টসের সময় বিশেষ স্মারকও উপহার দেওয়া হয় দুই দলের অধিনায়ককে।

টেস্ট শুরুর আগে ঘন্টা বাজানো হয়েছে। এটি বাজিয়েছেন সাবেক অধিনায়ক আকরাম খান। লর্ডস বা ইডেন গার্ডেনে ঘন্টা বাজানোর রেওয়াজ থাকলেও বাংলাদেশের কোনও ভেন্যুতে ছিল না। সিলেট দিয়ে এর যাত্রা শুরু হলো।

বাংলাদেশ দল: লিটন দাস, ইমরুল কায়েস, নাজমুল হোসেন, মমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ, আরিফুল হক, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, নাজমুল ইসলাম ও আবু জায়েদ।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআই

Wordbridge School
Link copied!