• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ফাইনালে হেরেও বাংলাদেশকে গর্বিত করল মাশরাফিরা


ক্রীড়া প্রতিবেদক সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৮, ০২:১৮ এএম
ফাইনালে হেরেও বাংলাদেশকে গর্বিত করল মাশরাফিরা

ঢাকা: ভারতের সামনে ২২৩ রানের লক্ষ্য। এটা তো এক ফুৎকারে উড়ে যাওয়ার কথা। ভারতের যারা খেলা দেখেছেন তাদের এমনটাই মনে হওয়ার কথা। এই রানে কী লড়াই করবে বাংলাদেশ, ২২২ রানে গুটিয়ে যাওয়ার পর অনেকের মুখে এমন কথা নিশ্চয় বেড়িয়েছিল। কিন্তু মাশরাফিরা দেখিয়ে দিলেন ২২২ রান নিয়েও ভারতের বিপক্ষে লড়া যায়। ভারত যে জিতল সেটা এমনি এমনি নয়, তাদের একেবারে কালঘাম ছুটে গেছে। বাংলাদেশ ৩ উইকেটে হেরেছে বটে, কিন্তু এর মধ্যে গর্বও আছে। ইস, আর কয়েকটা রান যদি স্কোরবোর্ডে জমা করা যেত তাহলে হয়তো প্রথমবার এশিয়া কাপের শিরোপা বাংলাদেশেই আসতো। সেটি হয়নি বাংলাদেশের মিডল অর্ডার হঠাৎ দপ করে নিভে যাওয়ায়। আগামী কিছুদিন যে বাংলাদেশকে কয়েকটা রানের আফসোস তাড়া করে ফিরবে সেটি না বললেও চলে।

এদিন ২২৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দু’ওপেনার রোহিত শর্মা ও শিখর ধাওয়ান শুরুটা ভালোই করেছিলেন। তবে ধাওয়ানকে ইনিংসটাকে লম্বা করতে দিলেন না নাজমুল ইসলাম অপু। ৩৫ রানের মাথায় তাঁর বলেই ধাও্য়ান ব্যক্তিগত ১৫ রান করে সৌম্য সরকারের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়েছেন।

৪৬ রানে আম্বাতি রাইডুকে (২) ফিরিয়েছেন মাশরাফি উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানিয়ে। তবে ভারতকে সবচেয়ে বড় ধাক্কাটা দিয়েছেন রুবেল হোসেন। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা রোহিত শর্মাকে ফিরিয়েছেন তিনি। ৮৩ রানের মাথায় রুবেলকে ছক্কা মারতে চেয়েছিলেন ভারত অধিনায়ক, কিন্তু ছক্কা না হয়ে সেটি চলে যায় নাজমুলের হাতে।নিদাহাস ট্রফির ফাইনালে বাংলাদেশকে এক হাতে হারানো দিনেশ কার্তিককে (৩৭) এলবিডব্লুয়ের ফাঁদে ফেলেছেন মাহমুদউল্লাহ। এর পর কেদার যাদবকে নিয়ে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার আগেই ধোনিকে (৩৬) উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেছেন মোস্তাফিজুর। খানিকবাদে রবিন্দ্র জাদেজাকে (২৩) ফিরিয়ে ম্যাচ জমিয়ে তোলেন রুবেল। পরে ভুবনেশ্বরকে (১৪) ফেরান মোস্তাফিজুর। ক্র্যাম্প করায় মাঠের বাইরে চলে গিয়েছিলেন কেদার যাদব। উপায়ন্তর না দেখে আবার ফেরেন তিনি। তাঁর ব্যাটেই একেবারে শেষ বলে জয় তুলে নিল ভারত। ৩ উইকেটে জিতে সপ্তমবার এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই জিতল দলটি। রুবেল ২৬ ও মোস্তাফিজুর ২৮ রানের বিনিময়ে পেয়েছেন ২টি করে উইকেট। ১টি করে উইকেট নিয়েছেন নাজমুল, মাশরাফি ও মাহমুদউল্লাহ।

এর আগে বাংলাদেশের ইনিংসে ব্যাটসম্যানদের আত্মহত্যার মিছিলে ব্যতিক্রম ছিলেন  একজন। তিনি লিটন দাস। ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি করেও আনন্দটা উদযাপন করতে পারেননি। করবেন কি করে কিছুক্ষণ আগেই যে রবিন্দ্র জাদেজার দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ে রান আউটে কাটা পড়ে ফিরেছেন সতীর্থ মোহাম্মদ মিঠুন। অবশ্য সেখানে লিটন বা মিঠুনের কারোরই দোষ নেই। লিটনের শট ঝাঁপিয়ে পড়ে ফিল্ডিং করে দ্রুতই ছুরে দিয়েছেন নন স্ট্রাকইপ্রান্তে।

মিঠুনেরটা না হয় মানা গেল। বাকিরা যে উইকেট একরকম ছুরে দিয়ে আসলেন। আর এ কারণেই শুরুতে যে চাপ ভারতের ওপর ছিল সেই চাপ চাহাল-কুলদীপরা বাংলাদেশকে ফিরিয়ে দিয়েছে দ্রুত ৫ উইকেট তুলে নিয়ে। ৩৩ বলে ফিফটি করা এই ওপেনার জীবনের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন ৮৭ বলে। শেষ অবধি তাঁকে তিনি থেমেছেন লিটন থেমেছেন কুলদীপের বলে ধোনির হাতে স্ট্যাম্পড হয়ে। তার আগে ১১৭ বলে ১২ চার আর দুই ছক্কায় ১২১ রানের ইনিংস খেলেন লিটন। অবশ্য তাঁর আউটের আগে থেকেই ব্যাটসম্যানরা যাওয়া-আসার মিছিল শুরু করেন।

ওপেনিংয়ে মেহেদি হাসান মিরাজকে নামিয়ে চমকে দেয় বাংলাদেশ। গোটা টুর্নামেন্টে ওপেনিং জুটি থিতু হতে পারেনি। সেখানে লিটন-মিরাজের জুটি রানটাকে নিয়ে গেছে ১২০ রান অবধি। ১২০ রানে মেহেদি হাসান মিরাজকে (৩২) আউট করে ওপেনিং জুটি ভাঙেন কেদার যাদব। ভারতের বিপক্ষে এটি বাংলাদেশের ওপেনিং জুটিতে সর্বোচ্চ রান। এরপর বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও ব্যাটসম্যানদের অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস ডুবিয়েছে।

আগের ম্যাচের মতো এ ম্যাচেও এলবিডব্লুয়ের শিকার হয়েছেন ইমরুল কায়েস (২) চাহালের বলে। কেদার যাদবের বলে মুশফিকুর রহীম (৫) নির্ভার মনে করে বড় শট খেলার খেসারত দিয়েছেন। মিঠুন তো জাদেজার দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ের বলি হলেন। মাহমুদউল্লাহকেও (৪) টিকতে দিলেন না বুমরাহ। সৌম্য সরকার চেষ্টা করে গেলেন লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যানদের নিয়ে। কিন্তু রান আউট হয়ে তিনি ফিরে যাওয়ায় স্কোরটা বড় হলো না। সৌম্য ৩৩ রান করেছেন ৪৫ বলে। লিটন-মিরাজ-সৌম্য বাদে আর কেউই দুই অঙ্কের ঘর স্পর্শ করতে পারল না। যেটা সাধারণ দর্শকদের মেনে নেওয়াটা কষ্টকরই বটে। বাংলাদেশ ৪৮.৩ ওভারে অলআউট হওয়ার আগে তুলতে পেরেছে ২২২ রান।

সোনালীনিউজ/আরআইবি/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!